কোনো কিছুতেই আন্দোলন আটকাতে পারবে না বলেছেন ফখরুল ইসলাম
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ঐক্যবদ্ধ হয়ে মাঠে নামতে পারলে ‘কোনো কিছুতেই এই অবইধ সরকার’ আামাদের আন্দোলন থামাতে পারবে না।
বৃহস্পতিবার ঢাকায় এক প্রতিবাদ সমাবেশে তিনি নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন এবং অবিলম্বে ‘নিরপেক্ষ’ সরকারের অধীনে জাতীয় নির্বাচন দেওয়ারও দাবি জানিয়েছেন।
ফখরুল বলেন, “আমরা স্পষ্ট ভাষায় বলতে চাই, আমাদের যে নির্বাচন কমিশন, যারা সমস্ত নির্বাচনী ব্যবস্থাকে ধ্বংস করে দিয়েছে, তাকে অবিলম্বে পদত্যাগ করে নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন করতে হবে। এই সরকারকে অবিলম্বে নিরপেক্ষ সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করে পদত্যাগ করতে হবে এবং নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে, নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশনের পরিচালনায় একটি অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচনের মধ্য দিয়ে জনগণের পার্লামেন্ট ও জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে।”
নেতাকর্মীদের উদ্দেশে বিএনপি মহাসচিব বলেন, “আসুন আমরা সেই লক্ষ্যে সবাই ঐক্যবদ্ধ হই। কোনো কিছুই আমাদের আটকাতে পারবে না। ইনশাল্লাহ জনগণকে নিয়ে আমরা সামনের দিকে এগিয়ে যাব- এই হোক আমাদের শপথ।”
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের সমালোচনা করে ফখরুল বলেন, “একটা ভয়াবহ আইন তৈরি করা হয়েছে, ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্ট। এর মাধ্যমে বাংলাদেশের মানুষের বাক স্বাধীনতা কেড়ে নেওয়া হয়েছে, সংবাদপত্রের স্বাধীনতা কেড়ে নেওয়া হয়েছে।”
সরকারের সমালোচনা করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, “এই দখলদারি সরকার শুধুমাত্র ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য আজকে ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্টের মত ভয়াবহ আইন তৈরি করেছে, যেটা দিয়ে তারা ক্ষমতায় টিকে থাকতে পারে, অন্যায়-অত্যাচার-নিপীড়ন-নির্যাতন করে।”
বিএনপির এই সমাবেশে নেতা-কর্মীদের আসতে ‘বাধা দেওয়ার’ অভিযোগ করে ফখরুল বলেন, “আমি বলতে চাই, আপনারা এত ভয় পান কেন? সমাবেশের অনুমতি দেওয়ার পরে চতুর্দিক বন্ধ করে দিয়ে আমাদের নেতা-কর্মী-সমর্থকদের এখানে আসতে দেন না। কারণ আপনারা জানেন, নেতা-কর্মী-সমর্থক-জনগণ যদি জেগে ওঠে, তাহলে আপনাদের এই বেআইনি ক্ষমতা রাখা সম্ভব হবে না।
“আমরা স্পষ্ট ভাষায় বলতে চাই, ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্ট- এটা বাতিল করতে হবে অবিলম্বে। যাদেরকে এই আইনে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, যুবদলের নেতা রফিকুল আলম মজনুসহ সকলকে অবিলম্বে মুক্তি দিতে হবে।”
মির্জা ফখরুল বলেন, “আমি সাবাস দিতে চাই, ধন্যবাদ জানাতে চাই কার্টুনিস্ট কিশোরকে, আজকে সে মামলা করেছে তার ওপরে নির্মম নির্যাতনের বিরুদ্ধে। এই সাহস নিয়ে সকলকে বেরিয়ে আসতে হবে, আজকে এই সাহস নিয়ে সকলকে এই অন্ধকারকে দূর করার জন্য, এই স্বৈরাচারকে দূর করার জন্য, যারা আমাদের স্বাধীনতার সব চেতনাকে ধ্বংস করে দিয়ে আমাদের গণতান্ত্রিক অধিকারকে কেড়ে নিয়েছে, তাদেরকে পরাজিত করবার জন্য আজকে সাহস নিয়ে আমাদেরকে গণতান্ত্রিকভাবে সোচ্চার হতে হবে।”
মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ বিএনপির উদ্যোগে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এই প্রতিবাদ সমাবেশ ঘিরে সকাল ৯টা থেকে ব্যাপক পুলিশ মোতায়েন করা হয়। মৎস্যভবন মোড়, কদম ফোয়ারা মোড়, তোপখানা ও সচিবালয়ের সড়কসহ আশপাশের সড়কে বসানো হয় ব্যারিকেড। সচিবালয়ের কাছে রাখা হয় জলকামানের গাড়ি ও সাঁজোয়া যান।
সকাল সাড়ে ১০টায় যথন সমাবেশ শুরু হয়, হাবিব উন নবী খান সোহেলসহ শতাধিক নেতা-কর্মী তখন জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনের সড়কে ছিলেন। পুলিশ এক পর্যায়ে ওই সড়কে যান চলাচলও বন্ধ করে দেয়।
সমাবেশ থেকে বলা হয়, এই কর্মসূচি হবে সংক্ষিপ্ত। বিএনপি মহাসচিবের বক্তব্যের মধ্য দিয়ে সাড়ে ১১টার আগেই সমাবেশ শেষ হয়।
মহানগর দক্ষিণের সভাপতি হাবিব উন নবী খান সোহেলের সভাপতিত্বে কাজী আবুল বাশার ও আব্দুল আলিম নকির পরিচালনায় এ সমাবেশে বিএনপির আমান উল্লাহ আমান, আবদুস সালাম, নাজিম উদ্দিন আলম, আবদুস সালাম আজাদ, মহানগর উত্তরের বজলুল বাসিত আনজু, এজিএম শামসুল হক, যুব দলের এসএম জাহাঙ্গীর, এসএম জিলানী, গোলাম মাওলা শাহিন, শ্রমিক দলের সুমন ভুঁইয়া ও ছাত্র দলের দলের কাজী রওনাকুল ইসলাম শ্রাবন বক্তব্য দেন।
MBC NEWS
MRIDUL KAZI

No comments